Logo

আন্তর্জাতিক    >>   ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি শুরু

ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি শুরু

ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি শুরু

লেবাননে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছে। আজ (বুধবার) স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে এই যুদ্ধবিরতি শুরু হয়, যা ৬০ দিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। গত এক বছর ধরে চলা সংঘর্ষের ফলে হাজার হাজার মানুষ নিহত ও বহু মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর থেকেই ইসরায়েল গাজায় অভিযান শুরু করে। এর প্রতিক্রিয়ায় হিজবুল্লাহ, যে গোষ্ঠীটি ইরান সমর্থিত, হামাসকে সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। এরপর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে চলতে থাকে সংঘর্ষ।

গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার সময় বলেন, এটি লেবাননের জন্য একটি নতুন সূচনা এবং যুদ্ধের অবসানে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বাইডেন এই চুক্তিকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে অভিহিত করেছেন, যার মাধ্যমে ইসরায়েল নিরাপত্তা বিষয়ে আরও মনোযোগ দিতে পারবে এবং হিজবুল্লাহ বা অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রতি প্রতিরোধ গড়বে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই চুক্তির জন্য বাইডেনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতি শর্ত অনুযায়ী ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ যদি কোনো নতুন হুমকি সৃষ্টি করে, তবে ইসরায়েল তাদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণে পুরোপুরি স্বাধীন থাকবে।

চুক্তি অনুসারে, ইসরায়েল দক্ষিণ লেবানন থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করবে এবং হিজবুল্লাহ তাদের ভারী অস্ত্র লিতানি নদীর উত্তর দিকে সরিয়ে নেবে। লেবানন সেনাবাহিনী এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী সীমান্তে নিরাপত্তা বজায় রাখতে একত্রে কাজ করবে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলতে থাকা সংঘর্ষে, লেবানন দাবি করেছে যে, কমপক্ষে ৩,৮২৩ জন নিহত হয়েছেন, বেশিরভাগই গত কয়েক সপ্তাহে নিহত হয়েছেন। এদিকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘাতে তাদের কমপক্ষে ৮২ জন সেনা এবং ৪৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হওয়ার আগে, গত মঙ্গলবার ইসরায়েল লেবাননের রাজধানী বৈরুতের কেন্দ্রস্থলে হামলা চালায়, এবং যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর হিজবুল্লাহও উত্তর ইসরায়েলে পাল্টা হামলার দাবি করে।

হিজবুল্লাহ আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, তবে লেবাননের পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরি মধ্যস্থতা করেছেন।

এদিকে, যুদ্ধবিরতির পর ইরান এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। তেহরান তাদের এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা লেবাননের সরকার, জনগণ এবং হিজবুল্লাহর প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানায়। ইরান এই গোষ্ঠীটিকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম শর্ত অনুযায়ী, ৬০ দিনের মধ্যে ইসরায়েল লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে এবং হিজবুল্লাহ তাদের ভারী অস্ত্র নির্দিষ্ট জায়গায় সরিয়ে নেবে। এটি শান্তির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

বাইডেন চুক্তি ঘোষণার সময় বলেন, এই চুক্তি স্থায়ী শান্তির দিকে একটি বড় পদক্ষেপ এবং ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে ভবিষ্যতে সংঘর্ষের সম্ভাবনা কমবে। তবে, কীভাবে এই শান্তি বজায় থাকবে, তা নির্ভর করবে ভবিষ্যতের উপর।